Breaking

Tuesday, January 15, 2019

কিসমিসের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

কিসমিসের সাথে সকলেই আমরা পরিচিত কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী কিসমিস হল আঙুর ফলের শুকনা রূপ তাই কিসমিসকে শুকনো ফলের রাজাও বলা হয় সোনালী-বাদামী রংয়ের চুপসানো ভাঁজ হওয়া ফলটি খুবই শক্তিদায়ক  এটি তৈরি করা হয় সূর্যের তাপ অথবা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সাহায্যে তাপের ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে পরিণত হয় কিশমিশে আর এভাবেই আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি করা হয় মিষ্টি স্বাদের কিসমিস যেকোন মিষ্টি খাবারের স্বাদ এবং সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য কিসমিস ব্যবহার করা হয় এছাড়াও পোলাও, কোরমা এবং অন্যান্য অনেক খাবারে কিসমিস ব্যবহার কর হয় রান্নার কাজে ব্যবহার করা হলেও কিসমিস সাধারণত কেউ খান না অনেকে এটাকে শুধু খাওয়াকে ক্ষতিকর মনে করেন অথচ পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছে এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪. গ্রাম, ডায়েটরি ফাইবার . গ্রাম, ফ্যাট . গ্রাম, প্রোটিন . গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন . মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম ২০. মিলিগ্রাম এটি রক্তে শর্করার মাত্রায় ঝামেলা তৈরি করে না এটি খেলে শরীরের রক্ত দ্রুত বৃদ্ধি পায়, পিত্ত বায়ুর সমস্যা দূর হয় এটি হৃদপিণ্ডের জন্যও অনেক উপকারি। 
নিচে কিসমিসের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা উল্লেখ করা হলঃ-
দেহে শক্তি সরবরাহ করতে
দুর্বলতা দূরীকরণে কিসমিসের জুড়ি নেয় দেহে শক্তি সরবরাহ করতে কিসমিসের অবদান অনেক বেশি কিসমিসে রয়েছে চিনি, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ, যা তাৎক্ষণিকভাবে দেহে এনার্জি সরবরাহ করে থাকে তাই দুর্বলতার ক্ষেত্রে কিসমিস খুবই উপকারী
দাঁত এবং মাড়ির সুরক্ষাতে
বাচ্চারা ক্যান্ডি চকলেট খেয়ে দাঁত মাড়ির ক্ষতি করে থাকে কিন্তু এগুলির পরিবর্তে বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করালে দাঁতের সুরক্ষা হবে আবার একই স্বাদ পাওয়ার সাথে সাথে বিপুল পরিমাণ উপকারও পাবে চিনি থাকার পাশাপাশি কিসমিসে রয়েছে ওলিনোলিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাঁধা দেয়
হাড়ের সুরক্ষাতে
কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা হাড় মজবুত করতে বেশ ভূমিকা পালন করে কিসমিসে আরো রয়েছে বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে প্রতিদিন কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস হাড়ের ক্ষয় এবং বাতের ব্যথা থেকে দূরে রাখবে বর্তমানে সময়ে অনেক রুগী অস্টিওপরোসিস (হাড়ের একধরনের রোগ) আক্রান্ত হচ্ছেন বোরন নামক খনিজ পদার্থের অভাবে এই রোগ হয় কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণ বোরন, যা অস্টিওপরোসিস রোগের প্রতিরোধক সুতরাং পরিবারের সবাইকে কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করানো উচিত
ইনফেকশনের সম্ভাবনা দূরীকরণে
কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টিইনফেমেটরী উপাদান যা কাঁটা-ছেড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন হওয়ার হাত থেকে দূরে রাখে
ক্যান্সার প্রতিরোধে
কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ায় বাধা প্রদান করে কিসমিসে আরো রয়েছে ক্যাটেচিন, যা পলিফেনলিক অ্যাসিড এটি ক্যান্সার মুক্ত রাখতে সাহায্য করে খাবারে প্রচুর পরিমাণ আঁশ থাকলে কোলোরেক্টারাল ক্যান্সার ঝুঁকি কমে যায় এক টেবিল চামচ কিশমিশ গ্রাম পরিমাণ আঁশ থাকে সুতরাং কিসমিসের আঁশ ক্যান্সারের ঝুঁকি একেবারে কমিয়ে দেয়
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে
কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে 
রক্তশূন্যতা দূর করতে
রক্তশূন্যতার কারণে অবসাদ, শারীরিক দুর্বলতা, বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে এমনকি, বিষণ্ণতাও দেখা দিতে পারে কিশমিশে আছে, প্রচুর পরিমাণে লৌহ উপাদান, যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে
জ্বর নিরাময় করতে
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ব্যাকটেরিয়ারোধী, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ফলে এটা ভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জ্বর নিরাময় করতে সাহায্য কারে
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিকরনে
রক্তে ভিটামিন , -বিটা ক্যারোটিন এবং -ক্যারোটিনয়েড থাকে কিসমিস এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে যা চোখের ফ্রি-রেডিকল দূর করতে সক্ষম কিসমিস খেলে সহজে শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে না দৃষ্টি শক্তি হ্রাস চোখে ছানি পড়ে না পাশাপাশি পেশী শক্তি হ্রাস পায় না কিসমিস চোখের জন্য খুব উপকারি
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে
কিশমিশ শুধুমাত্র রক্তের মধ্যে থাকা বিষো উপাদান কমায় তাই না, বরং রক্তচাপও কমায় কিশমিশের প্রধান উপাদান, পটাশিয়াম, রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে শরীরে থাকা উচ্চমাত্রার সোডিয়াম, রক্তচাপ বাড়ার প্রধান কারণ কিশমিশ শরীরের সোডিয়াম মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে
এন্টি কোলেস্ট্রোরেল উপাদানে
কিশমিশে কোন কোলেস্ট্রোরেল নাইএটাই বড় কথা না বরং কিশমিশে আছে এন্টি-কোলোস্ট্রোরেল উপাদান যা রক্তের খারাপ কোলোস্ট্রোরেলকেহ্রাস করতে সাহায্য করে কিশমিশের দ্রবণীয় আশ, লিভার থেকে কোলোস্ট্রোরেল দূর করতে সাহায্য করে এক কাপ কিশমিশে আছে গ্রাম পরিমাণ দ্রবণীয় আঁশ পলিফেনল নামক এন্টি-অক্সিডেন্টও কোলোস্ট্রোরেল শোষণকারী এনজাইমকে নিয়ন্ত্রণ করে
অনিদ্রা
অনেকের ঠিকমত ঘুম আসে না তাদের জন্য কিসমিস অনেক উপকারি কারন কিশমিসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর আয়রন যা মানুষের অনিদ্রার চিকিৎসায় বিশেষভাবে উপকারী তাই আজ থেকে কিসমিস খাওয়া শুরু করুন, দেখবেন অনেক উপকার পাবেন
এসিডিটি কমাতে
রক্তে অধিক মাত্রায় এসিডিটি (অম্লতা) বা টক্সিসিটি (বিষ উপাদান) থাকলে, তাকে বলা হয়, এসিডোসিস এসিডোসিসের (রক্তে অম্লাধিক্য) কারণে বাত, চর্মরোগ, হৃদরোগ ক্যান্সার হতে পারে কিশমিশ রক্তের এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে
পরিপাক তন্ত্রের উপকারিতায়
কিসমিস কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে নিয়মিত কিসমিস খেলে হজমশক্তি ভাল থাকে এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (মুখ থেকে পায়ু) পথ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়
মুখের স্বাস্থ্য রক্ষাকরনে
অনেকে মিষ্টি স্বাদের জন্য কিসমিসকে কেন্ডির সাথে তুলনা করে ভুল করেন তারা মনে করেন এটি দাঁত মুখের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কিসমিসে অলিনিলীক এসিড থাকে এটি মুখের ভিতর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্ম ব্যহত করে
ওজন বাড়াতে
কিসমিসে প্রচুর ফ্রুক্টোজ গ্লুকোজ থাকে তাই এটি ওজন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যদি সঠিক নিয়মে ওজন বাড়াতে চান তবে আজই কিসমিস খেতে পারেন
মস্তিষ্কের জন্য উপকারি
কিসমিসে থাকা বোরন মানুষের মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারি বোরন ধ্যান বাড়াতে সহায়ক ফলে কাজে মনোযোগ বাড়ে এটি বাচ্চাদের পড়াশোনাতেও মনোযোগী করে তুলতে পারে
কিসমিসের অপকারিতা
কিসমিসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বিদ্যমান আছে এতে এমন কোন ক্ষতিকর উপাদান নেয়, যার ফলে দেহের কোন ক্ষতি হতে পারে তাই আপনারা নিশ্চিন্তে কিসমিস খেতে পারেন।  দয়া করে লেখাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন। 

আরও জানুন-

রূপচর্চায় নিমপাতার গুনাগুন

নিমপাতার গুনাগুন উপকারিতা

অ্যালোভেরার ১৭টি বিস্ময়কর উপকারিতা

জেনে নিন অ্যালোভেরার অপকারিতা


No comments:

Post a Comment

Featured Post

যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির ঔষধ

ইনটিমেট  Intimate উপাদান ইনটিমেটঞগ ৫ ট্যাবলেট: প্রতিটি ফিল্ম কোটেড  ট্যাবলেটে আছে টাডালাফিল ৫ মি.গ্রা.। ইনটিমেটঞগ ১০ ট্যাবলেট: প্রতি...