কাজের চাপ, মানসিক চিন্তা থেকে মাইগ্রেন অ্যাটাক খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। বর্তমানে সবাই বড় হবার নেশায় মত্ত। কারোর সময় নেই। ছুটে চলছে সবাই। মানসিক চাপ ও চিন্তা বাড়ছে । ক্লান্তিও যাচ্ছে বেড়ে ।
মাইগ্রেনের অ্যাটাকও বাড়ছে সমান তালে। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া মাইগ্রেন অ্যাটাকের অন্যতম কারন।
ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা লেগেই আছে। একটার পর একটা পরীক্ষা আসছে। অফিসেও কাজের চাপ বাড়ছে। অনেকেরই রাতে ভাল ঘুম হয়না। সুস্থ বয়স্ক মানুষের
প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। এর কম হলে কিন্তু মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে।প্রতিদিন তাই ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা উচিত। মেনস্ট্রুয়েশনের সময় অনেক মহিলা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন। প্রতি মাসেই অনেক মহিলা এই সময় মাইগ্রেনে কষ্ট পান। এই সময় মন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় । তার সাথে এসে যখন মাথাব্যথা যুক্ত হয় তখন কষ্টের আর সীমা থাকেনা।
মাসিকের সময় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। হালকা ব্যায়াম করতে হবে। চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। ওরাল কন্ট্রাসেপটিভের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় অনেক সময় মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে। পিল সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়। এর থেকে কিন্তু মাইগ্রেনের এটাক হতে পারে। বর্তমানে অবশ্য স্বল্পমাত্রার পিল পাওয়া যায় । এসব থেকে এটাক কম হয়। অনেক সময় শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাইগ্রেন অ্যাটাক হয়ে থাকে। মেনপজের পরে অনেকের মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। ঠান্ডা লাগা, অ্যালার্জি, ইনফেকশন হলেও মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে। শীতের সময় তাই সাবধানে থাকা উচিত। বাইরে বের হলে অবশ্যই গরম কাপড় পরতে হবে। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। খুব উজ্জ্বল আলো বা তীব্র রোদে বেশিক্ষণ থাকলেও মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে।
অনেকেই কাছ থেকে টিভি দেখেন। এটি একেবারেই অনুচিত। এর ফলে মাইগ্রেন এটাক হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । তীব্র আলোর ঝলকানিতে মাইগ্রেনের ব্যাথা শুরু হতে পারে। মাইগ্রেনের সাথে অনেকে বিজ্ঞানী জীনের সম্পর্ক পেয়েছেন। পরিবারে একজনের থাকলে অন্যজনের হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা উচিত। এর ফলে ব্যাথা শুরু হতে পারে। শান্ত পরিবেশে মাইগ্রেনের রোগীদের থাকা উচিত। কফি, চকলেট, পনির, আইসক্রিম, মদ ইত্যাদি বর্জন করা উচিত। চকলেট পছন্দ করেনা এমন মেয়ে বিরল।
আইসক্রিম সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়। মাইগ্রেনের রোগীদের জন্য এসব খাবার বিপদ নিয়ে আসতে পারে। বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে
থাকা মাইগ্রেন রোগীর জন্য বিপদজনক ।
মাইগ্রেন খুব পরিচিত অসুখ। কি কি কারণে মাইগ্রেনের অ্যাটাক হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো । সবাই যদি সচেতন হয় তাহলে মাইগ্রেনের প্রকোপ অবশ্যই কমানো সম্ভব।
* অতিরিক্ত এক্সারসাইজ করার কারণেও ক্লান্তিতে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে।
* অনেক সময় দীর্ঘ দিন ধরে চলা কোনো ট্রমার কারণেও মাইগ্রেন অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে।
ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
সহকারী সার্জন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
No comments:
Post a Comment