জটিল চর্মরোগ সোরিয়াসিস: সোরিয়াসিস ত্বকের একটি
প্রদাহজনিত রোগ। এটি একটি জটিল রোগ, তবে সংক্রামক নয়। নারী-পুরুষনির্বিশেষে যেকোনো
বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে ত্রিশোর্ধ্ব মানুষ বেশি আক্রান্ত হন।
এই রোগ নিয়ে সচেতনতা খুব দরকার। পুরোপুরি ভালো হয় না বলে কিন্তু দুশ্চিন্তার কোনো
কারণ নেই। কারণ, এটি সহজেই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
কেন হয়?
এখনো কারণ শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সোরিয়াসিস হওয়ার পেছনে জন্মগত একটি
প্রভাব আছে। পরিবেশগত কারণও জড়িত, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও জড়িত
—সবকিছু
মিলিয়ে এটি একটি মাল্টি ফ্যাকটারাল কারণ।
কারা
আক্রান্ত হয়?
সোরিয়াসিস শুধু ত্বক নয়, আক্রমণ করতে পারে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও।
সাধারণত কনুই, হাঁটু, মাথা, হাত ও পায়ের নখ আক্রান্ত হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে
মাথার ত্বকও আক্রান্ত হয়ে থাকে। হাতের নখের রং নষ্ট হয়। গর্ত হয় কারও কারও।
অনেক ক্ষেত্রে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই যেমন-
* ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ (ইনফেকশন), টনসিলাইটিস বা মুখগহ্বরের
সংক্রমণ;
* ত্বকে আঘাত, কাটাছেঁড়া, রোদে পোড়া ইত্যাদি;
* কিছু কিছু ওষুধ, যেমন উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ম্যালেরিয়ার ওষুধ, লিথিয়াম,
কর্টিকোস্টেরোইড ইত্যাদি;
* ধূমপান ও মদ্যপান;
* শারীরিক ও মানসিক আঘাত-অসুস্থতা ইত্যাদি।
খাদ্যাভ্যাস ও প্রভাব
এই রোগের ক্ষেত্রে খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাসের কোনো সরাসরি প্রভাব নেই। কিন্তু অনেকেই
মনে করেন, লাল মাংস খেলে উপসর্গ বৃদ্ধি পায়। তাই লাল মাংস এড়িয়ে চলাই ভালো।
ডায়াবেটিসের মতো এই রোগে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আছে।
যেমন-আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, লিভারের রোগ, রক্তে স্নেহজাতীয় উপাদানের ভারসাম্যহীনতা
ইত্যাদি। রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও এই রোগের প্রভাব রয়েছে।
কী ধরনের চিকিৎসা আছে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগের ধরন, মাত্রা এবং রোগীর বয়স অনুসারে ওষুধ সেবন
এবং ক্রিম বা মলম লাগাতে হবে। লাল মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে
সতর্কতা
স্বামী বা স্ত্রীর সোরিয়াসিস থাকলে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
অধ্যাপক আফজালুল করিম, যৌন ও চর্ম বিভাগ, হলি
ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
No comments:
Post a Comment